বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা কিন্তু কম বেশি অনেকেরই একটি দৈনন্দিন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা ভোজন রসিক মানুষ রয়েছেন তারা কিন্তু এই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খুবই সমস্যায় পড়ে থাকেন। পাঠক বন্ধুদের জন্য তাই আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবারের এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কিছু নিয়ম-কানুন শেয়ার করে নিতে চলেছি।। যদি প্রতিবেদনটি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
সুযোগ পেলেই হয়তো কেউ এটা-ওটা খেয়ে ফেলেন, নিজেকে সামলাতে পারেন না।কেউ হয়তো ঘুম ভেঙে ছুট দেন অফিসে, রাজ্যের কাজ সেরে বাসায় ফিরে ক্লান্ত শরীরে ব্যায়াম করার মতো মনের জোর থাকে না। ছুটির দিনের সঙ্গীও সেই আলসেমি।ব্যায়াম আর খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের কিন্তু কিছু নিয়মকানুনও আছে। একটি বিষয় এর মধ্যে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হলো, ওজন কমাতে গিয়ে কোনো বিশাল লক্ষ্য নির্ধারণ করা যাবে না। ধীরগতির একটি পরিকল্পনা সামনে রেখে এগোনোই ভালো। তবে তার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটা রুটিন তৈরি করতে হবে এবং কিছু জিনিস মেনে চলতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে যে নিয়ম গুলি মেনে চলবেন—
- সর্বদা আঁশযুক্ত খাবার দিয়ে ভোজন শুরু করবেন।নানা ধরনের সবজি সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। সবজি ভাপিয়ে তাতে সুস্বাদু মসলা মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন শুরুতে। এরপর আমিষজাতীয় খাবার খেয়ে নিন। হতে পারে এটা মাছ বা মাংস দিয়ে করা কোনো পদ, ডিম বা ডালও হতে পারে। একদম শেষের দিকে শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত অথবা রুটি পাতে যোগ করুন। ঠিক এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই যদি আপনারা খাবার সম্পূর্ণ করেন তাহলে কিন্তু বহুক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকবে এবং কোন শারীরিক সমস্যাও হবে না।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনাকে সকালের জলখাবারের দিকটা একটু বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।সকালে আমিষ খাবেন অবশ্যই। মাছ–মাংসের পদ না হলেও নিদেনপক্ষে ডিম। দুধও খেতে পারেন, তবে চিনি ছাড়া। সঙ্গে অবশ্যই রাখুন সবজি। বাহারি সবজির একটা পদ করে নিলে ঝামেলা কম হবে।অনেকে কিন্তু সকালে বনরুটি, কেক, বাটারবান, হানিবানের মতো ‘রেডিমেড’ ব্রেকফাস্ট গ্রহণ করেন। যদি আপনারও এই অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে এবার থেকে কিন্তু সেটি আর করবেন না।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় আপনারা ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। ভুসি ভিজিয়ে রেখে দেবেন না। জলে মেশানোর সাথে সাথেই সেটিকে পান করে ফেলুন, পরিবর্তন কয়েকদিনের মধ্যেই হাতেনাতে বুঝতে পারবেন।
- সকালের ব্রেকফাস্ট, দুপুরের লাঞ্চ অথবা রাতের ডিনার অর্থাৎ এই মূল খাবার গুলো গ্রহণ করার আগে কিন্তু অন্য খাবার চট করে খাবেন না।চেষ্টা করুন বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে। রেস্তোরাঁয় গেলে সাধারণত অতিরিক্ত তেল দেওয়া খাবার কিংবা মেয়োনেজ, পনির বা সাদা সসের মতো খাবার খাওয়া হয়। তাই কাজে যাওয়ার সময় বাড়ির খাবার নিয়ে বেরোন। এগুলোর পাশাপাশি কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই মিষ্টি এবং অ্যালকোহল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে যা আপনার শরীরের জন্য ব্যাপক রকমের ক্ষতিকারক।
- ওজন কমানোর লক্ষ্যে আপনাকে কিন্তু অবশ্যই ধৈর্য আর ধারাবাহিকতা দুটোই বজায় রাখতে হবে। কয়েকদিন কঠোরভাবে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে চলার পরে আপনি হঠাৎ করেই কিন্তু বিরক্ত হয়ে সেটি ছেড়ে দেবেন না।। সপ্তাহে এক দুদিন একটু অন্যথা হতে পারে তবে যতটা সম্ভব এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন । মাঝে সাজে নিজের পছন্দ অনুযায়ী লোভনীয় খাবার খেতে পারেন তবে সেটাও যেন একটু নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কম সময়ে ওজন ঝরাতে রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে শরীরও সুস্থ থাকে এবং মেদ কমে। দুপুরে ভারী খাবার খেতে পারেন কিন্তু ডিনারে সবসময় হালকা খাবার রাখুন। একটা রুটি, সবজি অথবা এক বাটি সুপ খেয়ে নিন।
- অতিরিক্ত স্ট্রেস কিন্তু ওজনের উপর প্রভাব ফেলে। স্ট্রেস কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম ভীষণ জরুরি। রাতে ৮ ঘন্টা ভাল করে ঘুমান।
আরও পড়ুন- Health Tips : চিনির পরিবর্তে গুড় খাওয়া কি আদৌ শরীরের জন্য ভালো? কি বলছেন পুষ্টিবিদেরা!