মাংস খেতে কমবেশি সকলেই বেশ পছন্দ করে থাকেন।প্রোটিনের একটি দারুণ উৎস হিসেবে মনে করা হয় এটিকে। কিন্তু চিকেন না মটন কোন মধ্যে বেশি প্রোটিন থাকে তা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে অনেকেরই। হয়তো আপনিও এই কৌতূহলীদের তালিকায় রয়েছেন। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনটি পড়লেই তবে আপনি জানতে পারবেন এই দুই মাংসের মধ্যে কার মধ্যে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন। প্রসঙ্গত প্রায় এক দশক আগে পর্যন্ত বাড়ির অন্দরমহলে কিন্তু মুরগির মাংসের প্রচলন ছিল খুবই কম। বরং সেই সময় মানুষ পাঁঠার মাংসেই বেশি স্বচ্ছন্দ ছিল। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের রসনাও পরিবর্তন ঘটেছে যার ফলস্বরূপ অচ্ছুৎ চিকেনই চলে এসেছে আমাদের প্রিয় খাবারের তালিকায়।
একটু লক্ষ্য করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন বর্তমানে দামের কারণেই হোক বা অন্য কোন কারণে মুরগির মাংসের দোকানে সামনেই বেশি লাইন থাকে। কিন্তু দোকানে থাকা ভিড় কি আর পুষ্টিগুণ বিচার করতে পারে? আপনাকে অবশ্যই মাংস খাওয়ার আগে জেনে নিতে হবে কোন মাংসের মধ্যে রয়েছে উৎকৃষ্ট মানের প্রোটিন? এই প্রসঙ্গে জনপ্রিয় পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত জানিয়েছেন, “পাঁঠার মাংস কিন্তু মোটেও বিষ নয়।বরং জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, এই মাংসে রয়েছে রাইবোফ্লাভিন, ভিটামিন বি ১২, পটাশিয়াম, জিঙ্ক এবং আয়রন সহ একাধিক উপকারী উপাদান। তাই কোনও সুস্থ মানুষ চাইলে অনায়াসে মাঝে মধ্যে পাঁঠার মাংস খেতে পারেন। এটি আপনার শরীরের পক্ষে বেশ উপকারীই হতে চলেছে”। অন্যদিকে একসময় খুব একটা জনপ্রিয় না হলেও মুরগির মাংস কিন্তু রয়েছে দারুণ প্রোটিনের উৎস।অন্য মাংসের তুলনাতে চিকেন যেমন খুব সহজপাচ্য অর্থাৎ খুব সহজেই হজম করা যায়, ঠিক তেমনভাবেই এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ উৎস।
এবার কথা হচ্ছে চিকেন আর মটন এর মধ্যে কোন মাংস বেশি উপকারী?
এই বিষয়ে শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত জানিয়েছেন যে, “৮৫ গ্রাম পাঁঠার মাংস থেকে পাওয়া যায় প্রায় ২৩ গ্রাম প্রোটিন। সেখানে সমপরিমাণ চিকেনে রয়েছে ২১.৫ খেকে ২২ গ্রাম প্রোটিন। তাই প্রোটিনের পরিমাণের হিসাবে এই দুইয়ের মধ্যে তেমন কোনও তফাত নেই। প্রোটিনের বিচারে এই দুই মাংসের মধ্যে কোন একটিকে বিশেষভাবে বেছে নেওয়ার সম্ভব নয়। বরং যদি কোন অসুবিধা না হয় সেক্ষেত্রে দুটোই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়ার শরীরের পক্ষে ভালো”। তবে পাশাপাশি শর্মিষ্ঠা দেবী এও জানিয়েছেন যে এই মাংস গুলি রান্না করার সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।পাঁঠার মাংস বা চিকেন রান্না করার সময় অনেকেই বেশি পরিমাণে তেল, মশলা ব্যবহার করেন। যার ফলস্বরূপ মাংসের ক্যালরি ভ্যালু কয়েক গুণ বেড়ে যায় যা আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। সুতরাং যতটা সম্ভব এই মাংসগুলোকে হালকা ভাবে রান্না করে খাবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রোটিন বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উৎসের দিক থেকে মুরগি এবং পাঁঠার মাংস বেশ উপকারী হলেও কিছু বিশেষ ব্যাধিতে এটাকে এড়িয়ে চলাই সাধারণের পক্ষে শ্রেয়।হার্টের অসুখ, ইউরিক অ্যাসিড বা কোলেস্টেরলের মতো রোগ থাকলে মাসে একবারের বেশি এইসব মাংস খাবেন না। নয়তো বিপদের মুখোমুখি হতে পারেন।