কর্মব্যস্ত জীবনে দাঁড়িয়ে আমাদের সকলকেই কিন্তু কমবেশি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হয় যা আমাদের এনার্জি নিষ্কাশন করে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় দিনের শেষে আমাদের শরীরের এনার্জি অনেকটাই ক্ষয় হয়ে যায় এবং ভীষণ ক্লান্তি বোধ হয়। তবে আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা এমন কিছু উপায়ের কথা বলব যা গোটা দিন ধরেই স্থিতিশীলতা (এনার্জি) বজায় রাখতে আপনাকে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে সময় নষ্ট না করে আজকের এই প্রতিবেদনটি শুরু করা যাক।
১) সূর্যালোক উপভোগ করুন:
মানবদেহের সুস্থতার জন্য এটি একটি ভীষণ কার্যকরী টিপস। চেষ্টা করুন একেবারে ভোর বেলার সূর্যের আলোয় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটতে বেরতে। এর ফলে আপনার মেলাটোনিন হরমোন ঠিক হবে যা ঘুম বাড়িয়ে দেয়।। ক্লান্তি বোধ অনেকটাই কমে যাবে এবং অনেকটা ফ্রেশ লাগবে।
২) প্রোটিন খাবার গ্রহণ করুন:
সকালের প্রাতরাঃশে যতটা সম্ভব প্রোটিন খাবার গ্রহণ করুন। যেমন ডিম দই অথবা বাদাম। প্রোটিন এবং পুরো শস্যজাতীয় খাবার শরীরের শক্তিকে ভাঙতে বেশি সময় নেয়। এছাড়াও প্রোটিন কিন্তু কোন কাজে মনোনিবেশ করা শক্তি বাড়িয়ে তোলে।
৩) ব্যায়াম করুন:
চেষ্টা করুন দিনের কিছুটা সময় ব্যায়াম কে দিতে। এতে আপনার শরীর জেগে উঠবে এবং ক্লান্ত বোধ কেটে যাবে। ব্যায়াম করার জন্য আপনি তাজা বাতাস এবং একটা ভালো রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গা বেছে নিতে পারেন। এতে আপনাদের এন্ডোরফিন হরমোন বেড়ে যাবে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আর বিপাক বাড়িয়ে তুলবে।
৪) ক্যাফেইন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন:
কফি খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুন কারণ শরীরকে শক্তি দিলেও এটাও একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং নির্ভরতা রয়েছে। অতিরিক্ত ক্যাফিন স্ট্রেসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং মাথাব্যথা থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ এবং ঘুম নষ্ট করে দেয়।
৫) ডিহাইড্রেট থাকুন:
ডিহাইড্রেশনের কারণে ও ক্লান্তি আসতে পারে তাই দিনের বেলায় আরও সক্রিয় বোধ করতে পরিমিত জল পান করতে ভুলবেন না। চিকিৎসকেরা প্রতিদিন সবাইকেই পরিমিত জলখাবার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে শরীরের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। শরীর সক্রিয় রাখতে জলের ভূমিকা অপরিহার্য।
৬) পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার চেষ্টা করুন:
অন্ততপক্ষে দিনে কুড়ি থেকে ত্রিশ মিনিট পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এটি দীর্ঘসময় আপনার ক্লান্তি বোধ দূরে রাখতে সাহায্য করবে এবং দিনের যেকোনো সময় আপনাকে ঘুমিয়ে পড়া থেকে বিরত করবে।
৭) মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করুন:
প্রতিদিনের মাল্টিভিটামিন দিয়ে পুষ্টির ঘাটতি এবং সাধারণ ক্লান্তি খুব সহজেই দূর করা যায়। আয়রনের ঘাটতি বা অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ক্লান্তির সাথে লড়াই করে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
৮) ধূমপান এড়িয়ে চলুন:
ধূমপান শুধু আপনার স্বাস্থ্যের জন্যই খারাপ নয় এটি আপনাকে দিনের বেলায় আরো ক্লান্ত বোধ করার জন্য প্রস্তুত করতে পারে। পাশাপাশি হৃদস্পন্দন আর রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় ধূমপান। অনেক ক্ষেত্রে অনিদ্রা এবং শক্তি হ্রাসের মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই যতটা সম্ভব ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন বা অতিরিক্ত থাকলে পরিমাণ কমিয়ে দিন ধীরে ধীরে।
৯) অ্যালকোহল সীমিত করুন:
অনেকেই মনে করেন যে অ্যালকোহল পান করলে পর্যাপ্ত ঘুম হয় তবে হয়তো জানেন না যে এটা শরীরের কর্ম ক্ষমতা এনার্জি কে দুর্বল করে দেয়। মধ্যাহ্নভোজনে বা বিকেলে অ্যালকোহল এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব।
১০) পরিমিত ঘুম:
দিনের শেষে ক্লান্তিবোধ কাটানোর জন্য ঘুমের থেকে ভালো বন্ধু কিন্তু আর হয় না। তাই অবশ্যই পরিমিত সময় ঘুমাবেন এবং প্রতিদিন একই সময়ে ওঠার চেষ্টা করবেন।