কমবেশি আমাদের মধ্যে বহু মানুষ এমন রয়েছেন যাদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশ কয়েকবার চা পান না করলে চলে না! যদি আপনিও এমন মানুষদের তালিকায় থেকে থাকেন তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি মিস করবেন না এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের হয়তো সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা না পেলে ঘুম ভাঙতেই চায় না.. বাঙালিদের মধ্যে কিন্তু লিকার থেকে দুধ চায়ের প্রচলন টাই বেশি। তবে এই দুধ চা খেতে যেমন সুস্বাদু তার কিন্তু বেশ কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। আসুন একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
চা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট চিকিৎসক কিংশুক প্রামাণিক জানিয়েছেন, “চিনি-দুধ ছাড়া চায়েরই উপকার বেশি। চিনি ছাড়া কালো চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পরিপাক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।তবে খালি পেটে চা খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। খালি পেটে দুধ-চা সরাসরি পাকস্থলীতে প্রভাব ফেলে। ফলে হজমের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামন্দার মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। পাশাপাশি এটি আমাদের দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়ায়। কিডনি রোগীদের জন্য এটা খুব ক্ষতিকর”। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই যাদের চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা কিন্তু এবার থেকে এই অভ্যাসটি ত্যাগ করা শুরু করে দিন। নয়তো বয়স বাড়ার সাথে সাথেই কিন্তু এই প্রত্যেকটি সমস্যা আপনার শরীরেও বেড়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন- Hair Care: বিশেষ কোনো খরচ ছাড়াই টাক মাথাতেও গজাবে চুল, বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া হেয়ার প্যাক
যদি সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে খেতে পারেন তাহলে কিন্তু চা আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন- পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী।
চা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ। সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন এবং এক কাপ কফিতে এর প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ (৮৫ মিলিগ্রাম) ক্যাফেইন রয়েছে। তবে দুধ চায়ের থেকে কিন্তু লিকার অথবা গ্রিন টি বেশি স্বাস্থ্যকর।জাপানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রিন টি পান করেন তারা মানসিকভাবে অনেক বেশি ফিট। সবুজ চায়ে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা প্রতিটি মানুষের শরীরেই প্রয়োজন। নিয়মিত সবুজ চা পান করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন- অতিরিক্ত চা খাওয়ার অভ্যাসে ভুগছেন? জেনে রাখুন এটিই বাড়িয়ে তুলছে আপনার শরীরে মারণরোগের ঝুঁকি