নিজেদের শরীরে বয়সের ছাপ (ত্বকের বয়স ) নিয়ে কমবেশি কিন্তু অনেক মানুষ চিন্তায় থাকেন। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে তাই আমরা এমন কিছু সুপারফুড সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি যা খুব সহজেই Anti-ageing প্রক্রিয়ায় আপনাকে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক দৈনন্দিন খাবারে কি কি রাখা উচিত আর কি কি উচিত নয়! প্রোটিনের স্বাস্থ্যকর উৎস এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। এই ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে ব্রকলি, অ্যাভোকাডো, ব্লুবেরী, মিষ্টি আলু এবং ডালিম।
সুপার ফুড গুলোতে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যের রশ্মি, দূষণ এমনকি মানসিক চাপের কারণে ত্বককে ক্ষতি থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো শরীরের প্রদাহ জনিত প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোলাজনের ক্ষতি কমাতেও দুর্দান্ত। ঠিক একই রকম ভাবে কিছু খাবার রয়েছে যা আপনাদেরকে অকাল বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। যেমন অতিরিক্ত চর্বি এবং তৈলাক্ত খাবার। বিভিন্ন ভাজা খাবার বা প্রক্রিয়াজাত মাংসে এই ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। খুব বেশি খেলে ত্বকে বলি রেখা দেখা যায় যা আপনাকে আপনার আসল চেহারার থেকেও বয়স্ক করে দেয়।
অনেকেই অ্যান্টি এজিং এর কথা চিন্তা করে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার কথা ভাবি। কিন্তু স্কিন কেয়ার এর পাশাপাশি যদি আপনি নিজের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন না ঘটান তাহলে কোন রকমের বদল দেখতেই পারবেন না। আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে সমস্ত খাবারগুলো আমাদের ত্বকের জন্য ভালো সেগুলোই কিন্তু আমাদের গ্রহণ করা উচিত ।
১) ব্রকলি:
ব্রকলি একটি প্রদাহ বিরোধী হিসেবে কাজ করে। বার্ধক্য ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই সবজি। এটি একটি অ্যান্টি এজিং পাওয়ার হাউজ যা ভিটামিন সি এবং কে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম ফাইবার এবং লুটেইন দ্বারা পরিপূর্ণ।
২) অ্যাভোকাডো:
এই উদ্ভিদ খাবারটি ও কিন্তু প্রধান প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে। এগুলি ফ্যাটি এসিড এ পরিপূর্ণ যা ত্বককে মসৃণ এবং নমনীয় করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে যা বার্ধক্য জনিত নেতিবাচক লক্ষণ গুলি প্রতিরোধ করে এবং এটি ত্বকের মৃত কোষ ঝরিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ক্যারোটিনয়েড গুলি আমাদের ত্বকের টক্সিন এবং সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।।
৩)ব্লু-বেরী:
যারা অল্পবয়সী থাকার সময় একটু মিষ্টি খাবার পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা একেবারে আদর্শ। এই বেরীর মধ্যে ভিটামিন এ এবং সি এবং এস্থসায়ানিন নামক একটি বয়স প্রতিরোধকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তার জন্যই ব্লুবেরির রং খুব সুন্দর নীল হয়ে থাকে। এই আন্টি অক্সিডেন্ট গুলো আমাদের ত্বককে সূর্যের রশ্মি দূষণ এবং বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
Read More: Health Tips : জেনে নিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু দুর্দান্ত টিপস, উপকার পাবেন সবাই
৪) মিষ্টি আলু:
মিষ্টি আলুর মধ্যে বিটা ক্যারোটিন নামের একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। বিটা ক্যারোটিন যখন আমাদের শরীর গ্রহণ করে তখন এটি ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। এই ভিটামিন টি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা পুনরুদ্ধার, ত্বকের পুনরুজ্জীবন, ত্বককে তরুণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ভিটামিন সি এবং ই এর একটি দুর্দান্ত উৎস। এটি গ্রহণ করলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
৫) ডালিম:
যারা বিভিন্ন কর্মসূত্রের বাইরে প্রচুর সময় কাটিয়ে থাকেন তাদের জন্য ডালিমের বেশ উপকারিতা রয়েছে। সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে এটি আমাদের ত্বককে রক্ষা করে এবং কোলাজেন কে ও রক্ষা করে। ডালিমে প্রচুর ফাইবার, আসিয়ান এবং ভিটামিন কে রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ট্যানিন, ফ্ল্যাভনল, লিগনান এবং ফেনোলিক এসিড যা দুর্দান্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
কোন ধরনের খাবার আপনাকে তরুণ দেখায়?
যেসব খাবারে আপনাকে কম বয়সী দেখাবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে মিষ্টি আলু ডালিম এবং ব্লুবেরি। এই ধরনের সুপার ফুড প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা ত্বককে ক্ষতিকারক বাহ্যিক কারণ এবং প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং বলিরেখা কমিয়ে আনে।
যারা অকালবার্ধক্য আনতে চান না তাদের অবশ্যই নোনতা চর্বিযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যতটা সম্ভব জাঙ্ক ফুড সীমিত ক রুন এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস থেকে দূরে থাকুন।
Anti-ageing হিসেবে পানীয়:
গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে কিছু কিছু পানীয় রয়েছে যা বলি রেখা দূর করতে সক্ষম। এর মধ্যে রয়েছে গ্রিন টি এবং আঙ্গুর। এছাড়াও আপনাকে অবশ্যই পরিমাণ মতো জল পান করতে হবে যাতে আপনার ত্বক সবসময় হাইড্রেট অবস্থায় থাকে। অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন আসছে যে খাবার কি সত্যি বার্ধক্য ফিরিয়ে দিতে পারে? তাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি গবেষণার মাধ্যমে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে যে এ সমস্ত খাবারগুলো ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে ।।