কথাতেই রয়েছে মানুষ ‘ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝেনা’… তাইতো সঠিক সময়ে দাঁতের যত্ন না করার কারণে হলুদ ছোপ থেকে শুরু করে মুখে দুর্গন্ধ জনিত আরো নানান রকমের সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই আছেন যারা হয়তো পুজোর আগে এই বিশেষ সমস্যাগুলোর কারণে অনেকটাই চিন্তায় রয়েছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে তো আর চিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে এগুলো দূর করা সম্ভব নয়! তবে পুজোর আগে নিজেকে ফিট এন্ড ফাইন রাখার লক্ষ্যে আপনারা কিন্তু চাইলে বাড়িতেই এই সমস্যাগুলো দূর করার চেষ্টা করতে পারেন। তার জন্য আপনাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে একেবারে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে হবে। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক।
আয়ুর্বেদে এমন এক পদ্ধতি রয়েছে, যা দাঁতের হলদে ছোপ তোলা এবং মাড়ির যত্ন— দু’টি কাজই অনায়াসে করে ফেলতে পারে। তেল দিয়ে কুলকুচি করার এই পদ্ধতি বিদেশে ‘অয়েল পুলিং’ নামে পরিচিত। আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো প্রাচীনকাল থেকে এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত রয়েছে, তবে এটি প্রকৃত পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নয়। কিন্তু আশা করছি আজকের এই প্রতিবেদনটি আপনাদের এই সমস্ত সমস্যা অনেকটাই সমাধান করে দেবে।
নারকেল তেল:
আজকের এই প্রতিবেদনের শুরুতেই আমরা বলব নারকেল তেলের কথা।নারকেল তেলের মধ্যে রয়েছে লরিক অ্যাসিড, যা আসলে মধ্যমানের এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অ্যাসিড আমাদের মুখের মধ্যে কোনরকম ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়তে দেয় না এবং দাঁতকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিশ্চিন্তে আপনারা কিন্তু এই তেল দিয়ে সহজেই অয়েল পুলিং করে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন- Health Tips : হার্ট সতেজ রাখতে প্রয়োজন খাদ্যভ্যাসে ৫টি পরিবর্তন, সঠিক তথ্যসহ জেনে নিন বিস্তারিত!
তিলের তেল:
তিলের তেলের মধ্যেও রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আমাদের দাঁত কে যত্নে রাখতে সাহায্য করে থাকে।তিলের তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, লিনোলেইক অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয় বেশ কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড। এই সমস্ত উপাদান মাড়ির যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং নারকেল তেল নিয়ে সমস্যা থাকলে আপনারা কিন্তু তিলের তেলের সাহায্য অয়েল পুলিংয়ের কাজ করতে পারেন।
অলিভ অয়েল:
স্বাস্থ্যকর মানুষেরা বিভিন্ন খাবারে, স্যালাডে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকেন। ওই একই তেল দিয়ে কুলকুচিও করা যায়। অলিভ অয়েলে রয়েছে পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা প্রদাহ নাশ করতে সাহায্য করে। সুতরাং নিশ্চিন্তে আপনারা এই তেলটি দিয়েও কিন্তু নিজেদের কাজ করে ফেলতে পারেন।
আরও পড়ুন- Health Tips : ব্লাড প্রেসার থেকে চুলের সমস্যা অথবা ত্বকের, এক সবজির রসেই দূর হবে, অবশ্যই পড়ে দেখুন
সূর্যমুখীর তেল:
চতুর্থ তেল হিসেবে আমরা বলব সূর্যমুখী তেলের কথা যা খুবই কার্যকরী। ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণে ভরপুর এই তেল দাঁত এবং মাড়ির সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে। তাই অয়েল পুলিং এর জন্য এটা কিন্তু খুব একটা খারাপ নয়।
ঘি:
অয়েল পুলিং-এ ব্যবহৃত বহু পুরনো একটি উপাদান হল ঘি। ঘিয়ের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ, মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত এবং মাড়ির যত্নে ব্যবহার করা যেতেই পারে ঘি। আবার ঘি ব্যবহার করলে কিন্তু খুব সহজেই দাগ ছোপের সমস্যা বা দুর্গন্ধের সমস্যা ও দাঁত থেকে দূর হয়ে যাবে।
কী ভাবে করতে হয় তেলের কুলকুচি বা অয়েল পুলিং?
মুখ ভর্তি তেল নিয়ে ঠোঁট দুটো শক্ত করে চেপে রাখতে হয়। তার পরে তেল মুখের ভিতর থেকে বাইরের দিকে ঠেলতে হয়। আবার বাইরের দিক থেকে ভিতর দিকে টানতে হয়। এ ক্ষেত্রে দাঁতের ফাঁক দিয়ে তেল যাওয়া আসা করে। তাতেই দাঁত এবং মা়ড়ির উপকার হয়।একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, তেলের কুলকুচির ফলে লালারসের গুণগত মান ভাল হয়। তাতে খাবার হজম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শরীরে মেদ জমে কম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদ্যন্ত্রের উন্নতি হয়।