বাঙালি মানেই কিন্তু এক কথায় ভোজন রসিক। বিশেষ করে বাঙালীদের যেহেতু বারো মাসে তেরো পার্বণ তাই প্রত্যেকটা উৎসব অনুষ্ঠানে কিন্তু নানান রকমের ভুরিভোজ চলতেই থাকে। আর এই ভুরিভোজের কারণে ওজন নিয়ে যে কতটা সমস্যায় সাধারণ মানুষকে পড়তে হয় তা নিয়ে হয়তো আর আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই । অনেকেই আছেন যারা হাজারো চেষ্টা করার পরেও কড়া ডায়েট মেনে চলতে পারেন না। তাই আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা সেই সমস্ত পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যেই তিনটি বিশেষ পানীয়ের কথা বলব যেগুলোর এক চুমুকেই আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। তাই একজন ভোজন প্রেমী মানুষ হলে আপনারা কিন্তু এই প্রতিবেদনটা মিস করবেন না। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস এর সাথে আপনারা কিন্তু নিশ্চিন্তে এই পানীয় রাখতেই পারেন। কারণ এগুলি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি কিন্তু শারীরিক সুস্থতার জন্য বেশ কার্যকরী।
1আপেল সাইডার ভিনিগার:
প্রথমেই আমরা বলব আপেল সাইডার ভিনিগারের কথা। প্রতিদিন সকালেই কিন্তু আপনারা এটি পান করতে পারেন। তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকার পাশাপাশি, টাইপ ২ ডায়াবিটিস, একজিমা, কোলেস্টেরলের মতো সমস্যারও নিরাময় হবে । যাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে তাদের কাছে এই পানীয় মহৌষধির মত।এক গ্লাস গরম জলে এক চামচ আপেল সাইডার ভিনিগার এবং মধু মিশিয়ে নিন। সকালে জলখাবারের আগে বা সাথে নিশ্চিন্তে পান করে নিন।
2আমলকি এবং জিরে:
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এই দ্বিতীয় পানীয় আপনাদের কাছে দারুন উপকারী হতে চলেছে।
আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, কপার, ম্যাঙ্গানিজ এবং পটাশিয়াম। এই উপকারী উপাদানগুলি বিপাক হার বৃদ্ধি করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে আমলকি। এক কাপ গরম জলে আধ কাপ আমলকির রস ও অল্প পরিমাণে ভাজা জিরে গুঁড়ো মেশান। ভাল করে মিশিয়ে মিশ্রণটি পান করুন। বাড়তি ওজন কমবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কিন্তু অনেকটা বাড়বে।
আরও পড়ুন- Weight Loss Tips: পুজোর আগেই দুর্দান্ত ফিগার পেতে চান? লেবুর জলে এই বিশেষ বীজ মিশিয়ে পান করুন!
3জিরে জল:
জিরের মধ্যে ক্যালরি প্রায় নেই বললেই চলে বরং এতে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য যা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও জিরেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এ, সি, ম্যাঙ্গানিজের মতো উপকারী খনিজ পদার্থ। এক কাপ জলে এক চামচ গোটা জিরে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সামান্য দারচিনি মিশিয়ে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন। তার পর জল ছেঁকে খেয়ে নিন। এই পানীয়ের ক্ষেত্রে ফলাফল পেতে গেলে কিন্তু অবশ্যই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
4সবুজ সবজির রস:
গবেষণায় দেখা গেছে যে বাঁধাকপি, পালং শাক এবং ধনেপাতার মতো সবুজ শাক আপনার শরীরের ওজন কমাতে পারে। এগুলি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং এন্টি-ইনফ্লেমেটরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা সময়ের সাথে সাথে শরীরের ওজন এবং চর্বি বৃদ্ধি হ্রাস করতে পারে। সবুজ শাকসবজিতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় এগুলোকে সবচেয়ে কার্যকরী করে তোলে..ওজন কমানোর পানীয় এই ধরনের জুস স্মুদি হিসাবে প্রস্তুত করা সহজশাক,শসা,সবুজ আপেল, এবং ধনে বা সেলারি সকালের জলখাবারে আপনারা রাখতেই পারেন।
5সবুজ চা বা গ্রিন টি:
গ্রিন টি বা সবুজ চায়ের মধ্যে ক্যাটেচিন আছে যা এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শক্তি বাড়ায় এবং চর্বির অণু ভেঙে দেয়। চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিকে স্ট্রেন করতে সেদ্ধ জলে এক মিনিটের জন্য গ্রিন টি পাতা তৈরি করুন। আপনার শরীরের বিপাকীয় হারের উপর নির্ভর করে আদর্শ পরিমাণ। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে প্রতিদিন দুই কাপ এই চা পান করা একটি কার্যকরী হিসাবে উপকারী।ওজন কমানোর পানীয়. চর্বি পোড়াতে এবং বিপাক উন্নত করার ক্ষমতা ছাড়াও, গ্রিন টি-তে থাকা যৌগগুলি বার্ধক্যজনিত খারাপ প্রভাবগুলি কমাতে, ক্যান্সারের মতো স্বাস্থ্যের অবস্থা প্রতিরোধ করতে, জ্ঞানীয় ক্ষমতা উন্নত করতে এবং আরও অনেক কিছুতে সহায়তা করে।